প্রকাশিত: ১০/০৬/২০১৬ ৯:১৪ এএম , আপডেট: ১০/০৬/২০১৬ ৯:১৪ এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক :
এবার পেশাধার একজন সাংবাদিককে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ফের নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এক সময়ের আলোচিত শিবির ক্যাডার রামুর গর্জনিয়ার সৈয়দ নজরুল ইসলাম। এ নিয়ে সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ আর নিন্দার ঝড় বইছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, সদ্য অনুষ্ঠিত রামুর গর্জনিয়া ইউপি নির্বাচনে নানা কূটকৌশল চালিয়ে আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীকে পরাজিত করে বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নজরুল।

এর পর থেকে তাঁর দাপটে এলাকার লোকজন অনেকটা আতঙ্কে বসবাস করছে। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার প্রভাব বিস্তার করছে সর্বত্র। বিশেষ করে তাঁর অতীত কর্মকান্ড নিয়ে তথ্য বহুল বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশ করার প্রতিশোধ স্বরুপ হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিয়েছেন হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী নামে একজন তরুণ সাংবাদিককে। যিনি জাতীয় দৈনিক সংবাদ, দৈনিক প্রিয় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান সম্পাদিত দৈনিক আজকের কক্সবাজার পত্রিকায় কর্মরত আছেন দীর্ঘদিন।

জানা গেছে, সৈয়দ নজরুল ইসলাম গত ৭জুন রামু থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। ওই এজাহারে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ৪০ জনের সাথে জড়িয়ে সাংবাদিক হাফিজুল ইসলাম চৌধুরীকেও ১০ নম্বর আসামি করা হয়।

হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, নজরুলের সঙ্গে আমার কোন ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব নেই। তবে হে সাংবাদিকতার শুরু থেকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে কলম ধরেছি। এ কারণে হয়তো এলাকার গুটি কয়েক লোকজন আমার ওপর ক্ষিপ্ত। তাঁদের ইন্দনেই মূলত আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে!

তিনি আরো বলেন, নজরুলের নিকট আত্মিয় ও গর্জনিয়ার বহু দূর্ণীতির হুতা আয়ুব সিকদার বাদী হয়ে অন্যান্যদের সঙ্গে জড়িয়ে ৬ জুন আমার বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত নং-০১ রামুতে ষড়যন্ত্রমূলক ফৌজদারী দরখাস্ত দেন। ওই দরখাস্তেও ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও নজরুল এবং আয়ুব সিকদার নানাভাবে আরো বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু-হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানান, এজাহারে সাংবাদিক হাফিজের নাম তিনি দেননি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজেই তদন্ত করার পর রহস্যজনক কারণে এজাহারে হাফিজের নাম অর্ন্তভূক্ত করেছেন।

তবে এমন অভিযোগ প্রত্যাখান করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বপন বড়–য়া বলেন, পুলিশ কেন অহেতুক সাংবাদিককে মামলায় জড়াবে। নজরুলইতো এজাহেরা তাঁর নাম দিয়েছে।

উল্লেখ্য, যুদ্ধাপরাধী সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর নিকট আত্মীয় সাবেক শিবির ক্যাডার নজরুল ইসলাম জামায়াত ইসলামির ব্যানারে ১৯৯৮ সালে গর্জনিয়ায় প্রথমবারের মতো ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

জানা গেছে, ছৈয়দ নজরুল ইসলাম শিক্ষা জীবনে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে কর্মী থেকে সাথী ও সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে এ জামায়াত নেতা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় বিভিন্ন রোহিঙ্গা জঙ্গী গোষ্ঠীর সঙ্গে বন্ধন গড়ে তুলে অস্ত্র ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ রয়েছে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ অফিস পুড়ানো (সাল ১৯৯১), নারী নির্যাতন-ধর্ষণ, যুবলীগনেতা হত্যা সহ এ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।

চট্টগ্রামের আলোচিত নির্মম এইট মার্ডার মামলায় অস্ত্রের যোদানদাতা হিসাবে নজরুলের বিরুদ্ধে তৎকালিন সময়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে শিরোনাম হয়েছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের নির্মম এইট মার্ডার, জামাল উদ্দিন অপহরণ, অধ্যক্ষ মহুরী হত্যাকান্ডের আসামীদের জবানবন্দীতে তার সরবরাহকৃত অস্ত্রের সত্যতাও মেলে।

পাঠকের মতামত